অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
২০১১ সালে লিখেছিলাম।
সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে মতামত দেবার বেলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল নির্ভর করেছেন সংবিধান এবং এ সংক্রান্ত আইনগুলোর বিধানের উপর। বিচারপতি আফজালের মতে, ‘রাজনীতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি অথবা সরকারী কোন নীতির উপর ভিত্তি করে সংবিধানের অধীনে সংসদের ক্ষমতা নীরিক্ষণের কোন সুযোগ নাই।’ তাই অষ্টম সংশোধনী মামলার তিনি ডিসেন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন শুধুমাত্র সংবিধানের বিভিন্ন বিধানের ব্যাখ্যা এবং কিছু আইনি উপায়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে।
বিচারপতি আফজাল চূড়ান্ত আইনি যুক্তি-তর্কে যাওয়ার আগে ‘সংশোধন’ শব্দটির মানে ঠিক করে নিয়েছেন। তাঁর মতে, “সংশোধন” শব্দটির আভিধানগত অর্থ হচ্ছে, ‘দোষমুক্ত করা’, ঠিক করা, অনুমোদন দেয়া, সংস্কার করা, পরিবর্তন করা, পুনর্নিমাণ করা, উন্নত ও উদ্ধৃত্ত করা।” (free from faults, correct, rectify, reform, make alteration, to repair, to better and surpass) এই মামলার বেলায় “সংশোধন” এর মানে ধরা হবে ‘পরিবর্তন’ (অলটারেশন), যেমনটি কেশভানন্দ মামলায় বেশিরভাগ বিচারপতিরা (মেজরিটি জাজমেন্ট) সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং নির্মাণকাঠামো সংশোধনের ব্যাপারে সংসদের ক্ষমতা প্রসঙ্গটি বুঝিয়েছিলেন।
বিতর্কের গোড়ায় যে ইস্যুটি:
বিচারপতি আফজাল আবেদনকারীদের উপস্থাপিত কিছু বক্তব্যকে বিবেচ্য বিষয় (ইস্যু) আকারে উল্লেখ করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মতামত দিয়েছেন। এর মধ্যে এক নম্বর ইস্যুটা ছিল ঠিক এরকম, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীন সংশোধনের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে গিয়ে সংসদ সংবিধানের আবশ্যকীয় বৈশিষ্টগুলো (এসেনসিয়াল ফিচারস) অথবা মৌলিক কাঠামো (বেসিক স্ট্রাকচার) এবং কাঠামো (ফ্রেমওয়ার্ক) বদলাতে পারে না। যদিও এই ক্ষমতার কোন প্রকাশ্য সীমারেখা নাই, পুরো সংবিধান পাঠে (নির্দিষ্ট করে অনু্েচ্ছদ ৭) দেখা যায় যে, সংবিধানের কিছু মৌলিক, চিরস্থায়ী এবং অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য আছে যা সংশোধন করা যায় না এবং এই ক্ষেত্রে সংশোধন ক্ষমতায় অনির্ধারিত সীমারেখা আছে।’
বিচারপতি আফজাল এই ইস্যুর সাথে পুরাপুরি দ্বিমত পোষণ করেছেন। এবং এই ইস্যুর তরফে দেওয়া আইনজীবীদের যুক্তিগুলোকে সাংবিধানিক এবং আইনি বিভিন্ন বিধানের যুক্তি ও নিরীক্ষণ দ্বারা উড়িয়ে দিয়েছেন।
যে নীতিগুলোর উপর খাড়া হয়ে আছে বিচারপতি আফজালের যুক্তি:
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে সংশোধনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিচারপতি আফজাল তার রায়ে অনুচ্ছেদ ১৪২-এর ব্যাখ্যা শুরু করার আগে কিছু নীতির উপর ভরসা করেছেন, যেগুলো সাংবিধানিক বিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সর্বদা বিবেচনায় রাখা আবশ্যক। তিনি সাবেক প্রধান বিচারপতি মুনিরের একটি রেফরেন্স মামলার উল্লেখ করেছেন (পাকিস্তানি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক), পিএলডি ১৯৫৭, সুপ্রীম কোর্ট ২১৯=৯ডিএলআর (সুপ্রীম কোর্ট) ১৭৮। যেখানে বেশ কিছু নীতির উল্লেখ করা হয়েছে এবং মতামত দেয়া হয়েছে যে, ‘সংবিধান প্রণয়নের মৌলিক নীতি হচ্ছে সর্বদা সংবিধান প্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে কার্যকারিতা দেয়া এবং যাতে জনগণ এরপরে তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।’
বিচারপতি আফজাল একজন ওহাইও বিচারকের মতামতকেও গ্রহণ করেছেন। এইচ.এম কোম্পানী বনাম মুলার মামলায় (৯২ ওহাইও, ১৫) ঐ বিচারক রায় দেন যে, ‘সংবিধান গঠনের ধ্রুবতারা হল, যারা এটাকে প্রণয়ন করে এবং যারা এটাকে মেনে নেয় তাদের উদ্দেশ্য।’
অর্থাৎ বিচারপতি আফজাল এটা ধরে নিয়েছেন যে, সংবিধানের কোন বিধান পরিবর্তনযোগ্য কি-না এটি নির্ধারণের জন্য সংবিধানপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। আর সংবিধান প্রণেতাদের উদ্দেশ্য যাচাইয়ের জন্য বেশকিছু নীতির উপর গুরুত্ব দেয়া হয়:
এক. প্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে একত্রিত করার উপায় হল ব্যবহৃত ভাষা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া। ভাষা যদি শুধুমাত্র সহজ না হয়ে একটি সমন্বিত অর্থকে ঘোষণা করে- তবে সেটাই প্রণেতাদের উদ্দেশ্য। এর পরিণতি আসলে কোন ব্যাপার না।
দুই. উদ্দেশ্য বোঝা (একত্রিত) যেতে পারে পুরো কাজের বিবেচনা থেকে। কোন শব্দ অথবা বাক্যকে আলাদা করে বিবেচনার সুযোগ নাই।
তিন. একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি শব্দকে কার্যকারিতা দিতে হবে; সাধারণ নিয়ম হিসাবে, কোন শব্দ বা অভিব্যক্তি অর্থহীন বা অকার্যকর অবস্থায় থাকবে না।
চার. যদি শব্দগুলো একাধিক অর্থ প্রকাশ করে, তখন লর্ড এটকিনসন এর মতে (ভাচের’স মামলা (১৯১১-১৯১৩) All ER Reprint 241 (at p.248 “একটা নির্দিষ্ট গঠনকাঠামো (কনস্ট্রাকশন) থেকে যে ফলাফল দাড়ায় তাকে পরিনতি হিসাবে বিবেচনা করা জায়েজ, অনেকগুলো বিষয় আসতে পারে যা আসলে আইনপ্রণেতাগণ উদ্দেশ্য করেন নাই, গঠনকাঠামোর উদ্দেশ্য পূরণে তখন যেটা প্রথম দিকে থাকবে সেটাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
পাঁচ. লর্ড ইয়ারশেড এম আর-এর লেখা The length and detail of modern legislation” বইতে, একমাত্র নিরাপদ নীতি হিসাবে সন্দেহাতীতভাবে সাহিত্যিক কাঠামোকে পুণঃপ্রয়োগ করার দাবী তোলা হয়েছে।
বিচারপতি এটিএম আফজালের মতে, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে সংশোধনের ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতার কথা বলা আছে; সেটা প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা এবং এই অর্থে আমাদের সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ-ই সংশোধন ক্ষমতার বাইরে নয়।
বিচারপতি আফজাল তাঁর বক্তব্যকে যেভাবে আইনি যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন:
আমাদের সংবিধান হল ‘নিয়ন্ত্রিত সংবিধান’ (কন্টোলড কনসস্টিটিউশন)। কেননা স্বাভাবিক সংসদীয় প্রক্রিয়ায় এটাকে সংশোধন করা যায় না; বিশেষ প্রক্রিয়ার দরকার হয়। বিশেষ কিছু অনুচ্ছেদের বেলায় আরো বিশেষ ও কঠিন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ৫৮, ৮০, ৯২ক এবং অনুচ্ছেদ ১৪২ নিজেই। সংসদে এই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে কোন সংশোধনী পাশ হলে রাষ্ট্রপতির আর সম্মতির অনুমতি থাকে না, তাকে সম্মতি দেয়া বা না-দেয়ার জন্য গণভোটের আয়োজন করতে হয়। এই বিধানগুলো সংশোধন-অযোগ্য না, তবে প্রক্রিয়া হিসাবে সংসদে বিল পাশের পর গণভোটের দরকার।
বিচারপতি আফজাল তাঁর এই যুক্তির স্বপক্ষে নজির হাজির করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইনডিয়ার সংবিধান থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদে এরকমই কঠোর বিধান আছে, যেখানে কোন সংশোধনীর বৈধতা নির্ভর করে কয়েকটি রাজ্যের তিন-চতুর্থাংশ সংসদ সদস্যের অথবা তিন-চতুর্থাংশের কনভেনশনের উপর। ইনডিয়ার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬৮(২) সম্পর্কিত কোন সংশোধনীর বেলায় রাজ্যগুলোর অর্ধেক সংসদ সদস্যের অনুমোদন দরকার হয়। একারণেই এই বিধানগুলোকে অধিক সুরক্ষিত বিধান বলা হয়, তবে এগুলোও সংশোধন-অযোগ্য নয়।
অষ্টম সংশোধনী মামলায় আপিল আবেদনকারীর তরফের আইনজীবীরা দাবী করেছেন যে, সংবিধানের কিছু মৌলিক বিধান আছে, যেগুলো কখনোই সংশোধন করা যাবে না। অর্থাৎ সংশোধনের যেকোন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সেই ‘মৌলিক’ বিধানগুলোর পরিবর্তন করা যাবে না। বিচারপতি আফজাল এই দাবীকে নাকচ করে নিয়েছেন। তিনি সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করে প্রমাণ করেছেন যে, সংবিধানের কোন বিধানই সংসদের সংশোধন ক্ষমতার বাইরে নয়। সংশোধন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যেকোন বিধানকেই পরিবর্তন করা যায়। অনুচ্ছেদ ১৪২(১)(ক) বলছে যে, ‘সংসদের আইন দ্বারা এই সংবিধানের কোন বিধান সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন বা রহিতকরণের দ্বারা সংশোধিত হইতে পারিবে।’ বিচারপতি আফজালের মতে, ‘কোন বিধান’ নিশ্চিতভাবেই ‘সকল বিধানকে’ অন্তর্ভূক্ত করে। আর এখানে ভাষা পরিস্কার এবং কোন ধরণের সন্দেহের অবকাশ নাই। ‘কোন বিধান’ মানে ‘কিছু বিধানকে’ বুঝানো হয় নাই। এই পরিষ্কার ভাষা সংবিধানের যেকোন বিধান সংশোধনে সংসদের বিস্তৃত এবং পরিপূর্ণ ক্ষমতাকে পুরোপুরি নির্দেশ করে। তাই কিছু ‘মৌলিক’ বিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও সংশোধন করা যায় না বলে আইনজীবীরা যে দাবী করেছেন, তা আর টেকে না।
এছাড়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, অনুচ্ছেদ ১৪২ শুরু হয়েছে ‘নন অবস্টানটি ক্লজ’ দিয়ে। কোন বিধানের মধ্যে নন অবস্টানটি ক্লজ সাধারণত এই জন্য ব্যবহার করা হয় যে, অন্য বিপরীত যা কিছুই থাকুক না কেন এই বিধানের নিয়ম প্রাধান্য পাবে। কিছু বিধান ‘মৌলিক’ হওয়ার কারণে তা অসংশোধনযোগ্য অথবা যেকোন বিধানের সংশোধনীকে অনুচ্ছেদ ৭ এর অধীনে যাচাই করে বৈধতা অর্জন করতে হবে বলে আবেদনকারীরা যে দাবী তুলেছেন, অনুচ্ছেদ ১৪২-এ এধরণের একটি ক্লজের উল্লেখ থাকার কারণে, সেই দাবীর উপর সমর্থন ধরে রাখা যায়না।
বেসিক ফিচার তত্ত্ব যে কারণে ধোপে টেকে না:
বিচারপতি এটিএম আফজালের মতে, ‘মৌলিক বৈশিষ্ট্য’ (বেসিক ফিচার) তত্ত্ব দুটি মৌলিক কারণে আবেদন হারায়। তাঁর চমৎকার যুক্তির প্রথমটি হল, এটা এমন অপরিবর্তনযোগ্য যে সংবিধান প্রণেতাগণ সব বয়সের সব মানুষের জন্য সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন অথচ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কোন সুযোগ বা বিকল্প রাখলেন না। আর দ্বিতীয় যুক্তি হল, যদি সত্যিকার অর্থেই সংবিধান প্রণেতারা কথিত ‘মৌলিক বৈশিষ্ট্য’কে সংবিধানের চিরস্থায়ী বৈশিষ্ট্য করতে চাইতেন, তাহলে সংবিধানেই এ সংক্রান্ত একটা বিধান তারা রাখতে পারেতন। অথচ সংবিধানপ্রণেতারা অনুচ্ছেদ ১৪২ এ বিশেষ কিছু প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান সংশোধনের বিষয় সংক্রান্ত আর কোন সীমাবদ্ধতা রাখেন নাই।
এছাড়াও উপ-অনুচ্ছেদ (১ক) অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধনের ব্যাপারে গনভোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য ছিল এটাকে আরো একটু বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় করে তোলা। তার মানে হচ্ছে, উপ-অনুচ্ছেদ (১ক) পূর্ণভাবে এটাই নির্দেশ করে যে, এই অনুচ্ছেদে উল্লেখিত বিধানের বাইরে সংবিধানে এমন কোন বিধান এতটা মৌলিক না যে তার সংশোধনের জন্য গণভোটের দরকার পড়বে।
সংবিধান সংশোধনের সুযোগ থাকতে হবে:
বিচারপতি আফজালের মতে, সংবিধানের সব বিধানই গুরুত্বপূর্ণ। সংশোধনের প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ বা অগুরুত্বপূর্ণ বলে কোন পার্থক্য করা যাবে না যতক্ষণ না সংবিধান প্রণেতারা সংবিধানে স্পষ্টভাবে এর উল্লেখ না করেন। সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৪২ অনুচ্ছেদের ইতিবাচক ক্ষমতাকে যদি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের দেয়াল খাড়া করে বাধাগ্রস্থ করা হয়, তাহলে সংবিধান প্রণেতাদের স্পষ্ট উদ্দেশ্যকে বাতিল করে দেওয়া হয়। যা সংবিধান-বহির্ভূত অথবা বিপ্লবী পরিবর্তনের পথ খোলাশা করে সংবিধানের ধ্বংশ নিয়ে আসতে পারে। যতদিন সংবিধান থাকবে, ততদিনে জনগণের হাতে আর কোন পদ্ধতি খোলা থাকবে না।
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
২০১১ সালে লিখেছিলাম।
সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে মতামত দেবার বেলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল নির্ভর করেছেন সংবিধান এবং এ সংক্রান্ত আইনগুলোর বিধানের উপর। বিচারপতি আফজালের মতে, ‘রাজনীতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি অথবা সরকারী কোন নীতির উপর ভিত্তি করে সংবিধানের অধীনে সংসদের ক্ষমতা নীরিক্ষণের কোন সুযোগ নাই।’ তাই অষ্টম সংশোধনী মামলার তিনি ডিসেন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন শুধুমাত্র সংবিধানের বিভিন্ন বিধানের ব্যাখ্যা এবং কিছু আইনি উপায়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে।
বিচারপতি আফজাল চূড়ান্ত আইনি যুক্তি-তর্কে যাওয়ার আগে ‘সংশোধন’ শব্দটির মানে ঠিক করে নিয়েছেন। তাঁর মতে, “সংশোধন” শব্দটির আভিধানগত অর্থ হচ্ছে, ‘দোষমুক্ত করা’, ঠিক করা, অনুমোদন দেয়া, সংস্কার করা, পরিবর্তন করা, পুনর্নিমাণ করা, উন্নত ও উদ্ধৃত্ত করা।” (free from faults, correct, rectify, reform, make alteration, to repair, to better and surpass) এই মামলার বেলায় “সংশোধন” এর মানে ধরা হবে ‘পরিবর্তন’ (অলটারেশন), যেমনটি কেশভানন্দ মামলায় বেশিরভাগ বিচারপতিরা (মেজরিটি জাজমেন্ট) সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং নির্মাণকাঠামো সংশোধনের ব্যাপারে সংসদের ক্ষমতা প্রসঙ্গটি বুঝিয়েছিলেন।
বিতর্কের গোড়ায় যে ইস্যুটি:
বিচারপতি আফজাল আবেদনকারীদের উপস্থাপিত কিছু বক্তব্যকে বিবেচ্য বিষয় (ইস্যু) আকারে উল্লেখ করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মতামত দিয়েছেন। এর মধ্যে এক নম্বর ইস্যুটা ছিল ঠিক এরকম, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীন সংশোধনের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে গিয়ে সংসদ সংবিধানের আবশ্যকীয় বৈশিষ্টগুলো (এসেনসিয়াল ফিচারস) অথবা মৌলিক কাঠামো (বেসিক স্ট্রাকচার) এবং কাঠামো (ফ্রেমওয়ার্ক) বদলাতে পারে না। যদিও এই ক্ষমতার কোন প্রকাশ্য সীমারেখা নাই, পুরো সংবিধান পাঠে (নির্দিষ্ট করে অনু্েচ্ছদ ৭) দেখা যায় যে, সংবিধানের কিছু মৌলিক, চিরস্থায়ী এবং অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য আছে যা সংশোধন করা যায় না এবং এই ক্ষেত্রে সংশোধন ক্ষমতায় অনির্ধারিত সীমারেখা আছে।’
বিচারপতি আফজাল এই ইস্যুর সাথে পুরাপুরি দ্বিমত পোষণ করেছেন। এবং এই ইস্যুর তরফে দেওয়া আইনজীবীদের যুক্তিগুলোকে সাংবিধানিক এবং আইনি বিভিন্ন বিধানের যুক্তি ও নিরীক্ষণ দ্বারা উড়িয়ে দিয়েছেন।
যে নীতিগুলোর উপর খাড়া হয়ে আছে বিচারপতি আফজালের যুক্তি:
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে সংশোধনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিচারপতি আফজাল তার রায়ে অনুচ্ছেদ ১৪২-এর ব্যাখ্যা শুরু করার আগে কিছু নীতির উপর ভরসা করেছেন, যেগুলো সাংবিধানিক বিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সর্বদা বিবেচনায় রাখা আবশ্যক। তিনি সাবেক প্রধান বিচারপতি মুনিরের একটি রেফরেন্স মামলার উল্লেখ করেছেন (পাকিস্তানি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক), পিএলডি ১৯৫৭, সুপ্রীম কোর্ট ২১৯=৯ডিএলআর (সুপ্রীম কোর্ট) ১৭৮। যেখানে বেশ কিছু নীতির উল্লেখ করা হয়েছে এবং মতামত দেয়া হয়েছে যে, ‘সংবিধান প্রণয়নের মৌলিক নীতি হচ্ছে সর্বদা সংবিধান প্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে কার্যকারিতা দেয়া এবং যাতে জনগণ এরপরে তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।’
বিচারপতি আফজাল একজন ওহাইও বিচারকের মতামতকেও গ্রহণ করেছেন। এইচ.এম কোম্পানী বনাম মুলার মামলায় (৯২ ওহাইও, ১৫) ঐ বিচারক রায় দেন যে, ‘সংবিধান গঠনের ধ্রুবতারা হল, যারা এটাকে প্রণয়ন করে এবং যারা এটাকে মেনে নেয় তাদের উদ্দেশ্য।’
অর্থাৎ বিচারপতি আফজাল এটা ধরে নিয়েছেন যে, সংবিধানের কোন বিধান পরিবর্তনযোগ্য কি-না এটি নির্ধারণের জন্য সংবিধানপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। আর সংবিধান প্রণেতাদের উদ্দেশ্য যাচাইয়ের জন্য বেশকিছু নীতির উপর গুরুত্ব দেয়া হয়:
এক. প্রণেতাদের উদ্দেশ্যকে একত্রিত করার উপায় হল ব্যবহৃত ভাষা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া। ভাষা যদি শুধুমাত্র সহজ না হয়ে একটি সমন্বিত অর্থকে ঘোষণা করে- তবে সেটাই প্রণেতাদের উদ্দেশ্য। এর পরিণতি আসলে কোন ব্যাপার না।
দুই. উদ্দেশ্য বোঝা (একত্রিত) যেতে পারে পুরো কাজের বিবেচনা থেকে। কোন শব্দ অথবা বাক্যকে আলাদা করে বিবেচনার সুযোগ নাই।
তিন. একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি শব্দকে কার্যকারিতা দিতে হবে; সাধারণ নিয়ম হিসাবে, কোন শব্দ বা অভিব্যক্তি অর্থহীন বা অকার্যকর অবস্থায় থাকবে না।
চার. যদি শব্দগুলো একাধিক অর্থ প্রকাশ করে, তখন লর্ড এটকিনসন এর মতে (ভাচের’স মামলা (১৯১১-১৯১৩) All ER Reprint 241 (at p.248 “একটা নির্দিষ্ট গঠনকাঠামো (কনস্ট্রাকশন) থেকে যে ফলাফল দাড়ায় তাকে পরিনতি হিসাবে বিবেচনা করা জায়েজ, অনেকগুলো বিষয় আসতে পারে যা আসলে আইনপ্রণেতাগণ উদ্দেশ্য করেন নাই, গঠনকাঠামোর উদ্দেশ্য পূরণে তখন যেটা প্রথম দিকে থাকবে সেটাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
পাঁচ. লর্ড ইয়ারশেড এম আর-এর লেখা The length and detail of modern legislation” বইতে, একমাত্র নিরাপদ নীতি হিসাবে সন্দেহাতীতভাবে সাহিত্যিক কাঠামোকে পুণঃপ্রয়োগ করার দাবী তোলা হয়েছে।
বিচারপতি এটিএম আফজালের মতে, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে সংশোধনের ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতার কথা বলা আছে; সেটা প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা এবং এই অর্থে আমাদের সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ-ই সংশোধন ক্ষমতার বাইরে নয়।
বিচারপতি আফজাল তাঁর বক্তব্যকে যেভাবে আইনি যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন:
আমাদের সংবিধান হল ‘নিয়ন্ত্রিত সংবিধান’ (কন্টোলড কনসস্টিটিউশন)। কেননা স্বাভাবিক সংসদীয় প্রক্রিয়ায় এটাকে সংশোধন করা যায় না; বিশেষ প্রক্রিয়ার দরকার হয়। বিশেষ কিছু অনুচ্ছেদের বেলায় আরো বিশেষ ও কঠিন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ৫৮, ৮০, ৯২ক এবং অনুচ্ছেদ ১৪২ নিজেই। সংসদে এই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে কোন সংশোধনী পাশ হলে রাষ্ট্রপতির আর সম্মতির অনুমতি থাকে না, তাকে সম্মতি দেয়া বা না-দেয়ার জন্য গণভোটের আয়োজন করতে হয়। এই বিধানগুলো সংশোধন-অযোগ্য না, তবে প্রক্রিয়া হিসাবে সংসদে বিল পাশের পর গণভোটের দরকার।
বিচারপতি আফজাল তাঁর এই যুক্তির স্বপক্ষে নজির হাজির করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইনডিয়ার সংবিধান থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদে এরকমই কঠোর বিধান আছে, যেখানে কোন সংশোধনীর বৈধতা নির্ভর করে কয়েকটি রাজ্যের তিন-চতুর্থাংশ সংসদ সদস্যের অথবা তিন-চতুর্থাংশের কনভেনশনের উপর। ইনডিয়ার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬৮(২) সম্পর্কিত কোন সংশোধনীর বেলায় রাজ্যগুলোর অর্ধেক সংসদ সদস্যের অনুমোদন দরকার হয়। একারণেই এই বিধানগুলোকে অধিক সুরক্ষিত বিধান বলা হয়, তবে এগুলোও সংশোধন-অযোগ্য নয়।
অষ্টম সংশোধনী মামলায় আপিল আবেদনকারীর তরফের আইনজীবীরা দাবী করেছেন যে, সংবিধানের কিছু মৌলিক বিধান আছে, যেগুলো কখনোই সংশোধন করা যাবে না। অর্থাৎ সংশোধনের যেকোন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সেই ‘মৌলিক’ বিধানগুলোর পরিবর্তন করা যাবে না। বিচারপতি আফজাল এই দাবীকে নাকচ করে নিয়েছেন। তিনি সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করে প্রমাণ করেছেন যে, সংবিধানের কোন বিধানই সংসদের সংশোধন ক্ষমতার বাইরে নয়। সংশোধন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যেকোন বিধানকেই পরিবর্তন করা যায়। অনুচ্ছেদ ১৪২(১)(ক) বলছে যে, ‘সংসদের আইন দ্বারা এই সংবিধানের কোন বিধান সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন বা রহিতকরণের দ্বারা সংশোধিত হইতে পারিবে।’ বিচারপতি আফজালের মতে, ‘কোন বিধান’ নিশ্চিতভাবেই ‘সকল বিধানকে’ অন্তর্ভূক্ত করে। আর এখানে ভাষা পরিস্কার এবং কোন ধরণের সন্দেহের অবকাশ নাই। ‘কোন বিধান’ মানে ‘কিছু বিধানকে’ বুঝানো হয় নাই। এই পরিষ্কার ভাষা সংবিধানের যেকোন বিধান সংশোধনে সংসদের বিস্তৃত এবং পরিপূর্ণ ক্ষমতাকে পুরোপুরি নির্দেশ করে। তাই কিছু ‘মৌলিক’ বিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও সংশোধন করা যায় না বলে আইনজীবীরা যে দাবী করেছেন, তা আর টেকে না।
এছাড়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, অনুচ্ছেদ ১৪২ শুরু হয়েছে ‘নন অবস্টানটি ক্লজ’ দিয়ে। কোন বিধানের মধ্যে নন অবস্টানটি ক্লজ সাধারণত এই জন্য ব্যবহার করা হয় যে, অন্য বিপরীত যা কিছুই থাকুক না কেন এই বিধানের নিয়ম প্রাধান্য পাবে। কিছু বিধান ‘মৌলিক’ হওয়ার কারণে তা অসংশোধনযোগ্য অথবা যেকোন বিধানের সংশোধনীকে অনুচ্ছেদ ৭ এর অধীনে যাচাই করে বৈধতা অর্জন করতে হবে বলে আবেদনকারীরা যে দাবী তুলেছেন, অনুচ্ছেদ ১৪২-এ এধরণের একটি ক্লজের উল্লেখ থাকার কারণে, সেই দাবীর উপর সমর্থন ধরে রাখা যায়না।
বেসিক ফিচার তত্ত্ব যে কারণে ধোপে টেকে না:
বিচারপতি এটিএম আফজালের মতে, ‘মৌলিক বৈশিষ্ট্য’ (বেসিক ফিচার) তত্ত্ব দুটি মৌলিক কারণে আবেদন হারায়। তাঁর চমৎকার যুক্তির প্রথমটি হল, এটা এমন অপরিবর্তনযোগ্য যে সংবিধান প্রণেতাগণ সব বয়সের সব মানুষের জন্য সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন অথচ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কোন সুযোগ বা বিকল্প রাখলেন না। আর দ্বিতীয় যুক্তি হল, যদি সত্যিকার অর্থেই সংবিধান প্রণেতারা কথিত ‘মৌলিক বৈশিষ্ট্য’কে সংবিধানের চিরস্থায়ী বৈশিষ্ট্য করতে চাইতেন, তাহলে সংবিধানেই এ সংক্রান্ত একটা বিধান তারা রাখতে পারেতন। অথচ সংবিধানপ্রণেতারা অনুচ্ছেদ ১৪২ এ বিশেষ কিছু প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান সংশোধনের বিষয় সংক্রান্ত আর কোন সীমাবদ্ধতা রাখেন নাই।
এছাড়াও উপ-অনুচ্ছেদ (১ক) অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধনের ব্যাপারে গনভোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য ছিল এটাকে আরো একটু বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় করে তোলা। তার মানে হচ্ছে, উপ-অনুচ্ছেদ (১ক) পূর্ণভাবে এটাই নির্দেশ করে যে, এই অনুচ্ছেদে উল্লেখিত বিধানের বাইরে সংবিধানে এমন কোন বিধান এতটা মৌলিক না যে তার সংশোধনের জন্য গণভোটের দরকার পড়বে।
সংবিধান সংশোধনের সুযোগ থাকতে হবে:
বিচারপতি আফজালের মতে, সংবিধানের সব বিধানই গুরুত্বপূর্ণ। সংশোধনের প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ বা অগুরুত্বপূর্ণ বলে কোন পার্থক্য করা যাবে না যতক্ষণ না সংবিধান প্রণেতারা সংবিধানে স্পষ্টভাবে এর উল্লেখ না করেন। সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৪২ অনুচ্ছেদের ইতিবাচক ক্ষমতাকে যদি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের দেয়াল খাড়া করে বাধাগ্রস্থ করা হয়, তাহলে সংবিধান প্রণেতাদের স্পষ্ট উদ্দেশ্যকে বাতিল করে দেওয়া হয়। যা সংবিধান-বহির্ভূত অথবা বিপ্লবী পরিবর্তনের পথ খোলাশা করে সংবিধানের ধ্বংশ নিয়ে আসতে পারে। যতদিন সংবিধান থাকবে, ততদিনে জনগণের হাতে আর কোন পদ্ধতি খোলা থাকবে না।
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে। ২০১১ সালে লিখেছিলাম। সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে…
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে। ২০১১ সালে লিখেছিলাম। সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে…
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে। ২০১১ সালে লিখেছিলাম। সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে…
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে। ২০১১ সালে লিখেছিলাম। সংবিধান সংশোধনে সংসদের ক্ষমতার প্রশ্ন নিয়ে চলা বিতর্কে…
অষ্টম সংশোধনী মামলায় বিচারপতি এটিএম আফজাল ডিসন্টিং জাজমেন্ট দিয়েছেন। জাজমেন্টে তাঁর ব্যবহৃত যুক্তি, তত্ত্ব এবং আইনি দৃষ্টিকোন বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুরিসপ্রুডেন্সিয়াল অগ্রগতি। সংবিধান, এর সংশোধন এবং তাতে আদালত ও সংসদের সীমানা নিয়ে তাঁর বক্তব্য এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।